প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা নিজেদের হাতে রাখতে চায় না নির্বাচন কমিশন। এটিসহ তাদের বেশ কিছু সংস্কার প্রস্তাব এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এসব সংস্কার প্রতিষ্ঠানটিকে স্থায়ীভাবে পঙ্গু করার অপচেষ্টা বলে চিহ্নিত করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন।
বুধবার সুজনের এক অনলাইন আলোচনার মূল প্রবন্ধে এ কথা বলা হয়।
বক্তারা বলেন, নিজেদের শক্তিশালী করার পরিবর্তে ক্ষমতা কমাতে চাইলে, ইতিহাসে ঘৃণ্য হিসেবে এই কমিশনের নাম লেখা থাকবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনী প্রস্তাব ও নাগরিক ভাবনা শীর্ষক অনলাইন বৈঠকের আয়োজন করে নাগরিক সংগঠন সুজন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বর্তমান কমিশনের কড়া সমালোচনা করেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
তারা বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির এমন সিদ্ধান্তে কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা ধূলিস্যাৎ হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি আর কোনো দিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
সুশাসনের জন্যে নাগরিক সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, এসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে নির্বাচন কমিশন স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যাবে।
নির্বাচন কমিশনকে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করার তগিদ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ।
তিনি অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশন আইন প্রযোগে কঠোর হচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ভাব এমন যে, তারা মর্যাদা ভোগ করবেন, কিন্তু তার যে দায়িত্ব আছে তারা পালন করবে না। অলস মস্তিষ্ক যে শয়তানের কাণ্ড কারখানা, সেটার প্রমাণ দিচ্ছে কমিশন।’
বর্তমান কমিশনকে কড়া নজরদারিতে রাখার তাগিদ দিয়েছেন বক্তারা। নইলে জনগণের ভোটাধিকার ক্ষমতা নস্যাৎ হওয়ার আশঙ্কা তাদের।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, কমিশন নিজেদের ক্ষমতা, নিজেরা হ্রাস করতে চাচ্ছে। অথচ সরকারকে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বাধ্য করার জন্য চাপে রাখতে হয়।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে সংবিধান বিশেষজ্ঞ শাহদীন মালিক বলেছেন, কোনো সরকারি দলের অধীনে নির্বাচন হলে, সেখানে সরকারি দল জিতবে।
নির্বাচন কমিশনকে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করার পরামর্শ দেন বক্তারা। তারা অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না।
সবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘প্রান্তিক দল, যারা জাতীয় পর্যায়ে আসতে পারেননি, তাদেরকে সহজ শর্তে নিবন্ধন দিয়ে স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
তবে সমালোচনার মুখে বেশকিছু সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছে নির্বাচন কমিশন।